
ওমেনআই ডেস্ক : সিটিং সার্ভিসের নামে ‘চিটিং সার্ভিস’র জাঁতাকল থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে রাজধানীবাসীর। মহানগরে চলা বিভিন্ন পরিবহনের সিটিং সার্ভিস নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নানা অনিয়ম ও ভাড়া নৈরাজ্যের অভিযোগ রয়েছে যাত্রীদের। এই অভিযোগ তদন্তের পর আগামী ৩০ মার্চ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতি এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠকে বসবে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ বৈঠকের বিষয়টি জানান।
তিনি বলেন, রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া সিটিং সার্ভিসের ভাড়া নৈরাজ্য নিয়েও অভিযোগের শেষ নেই। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে আমরা তদন্ত করেছি। মালিক পক্ষের সঙ্গে আমরা আগামী ৩০ মার্চ এ বিষয়ে বৈঠকে বসবো। তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস চলবে কিনা।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি’র (বিআরটিএ) তথ্য মতে, রাজধানীতে কোনো ধরনের সিটিং সার্ভিস চলার অনুমতি নেই। মালিক পক্ষ বেআইনিভাবে সিটিংয়ের নামে অবৈধ একটি সার্ভিস চালু রেখেছে। তাছাড়া পরিবহনে দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলার কোনো নিয়ম নেই। কিন্তু রাজধানীবাসীর জন্য যে পরিমাণ পরিবহন থাকা দরকার, তা না থাকায় পরিবহন কোম্পানিগুলো গাড়ি বোঝাই করে যাত্রী নিয়ে চলাচল করে। আর এ সুযোগটি কাছে লাগিয়ে এক শ্রেণীর অসাধু পরিবহন মালিক-ব্যবসায়ী রাজধানীতে চালু করেছে বেআইনি সিটিং সার্ভিস। যা আবার প্রকাশ্যে স্টিকার লাগিয়ে চলছে।
এসব বাস মালিকরা সরকারের নির্ধারণ করা ভাড়া চার্টের তোয়াক্কা না করে নিজেদের ইচ্ছা মতো যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করছে। আবার অনেক সময় দেখা যায় সিটিং সার্ভিসের কথা বলে দাঁড়িয়েও যাত্রী নেওয়া হচ্ছে।
সিটিং সার্ভিসের নামে নৈরাজ্য নিয়ে চরম অসন্তুষ্টি ও ক্ষোভ রয়েছে রাজধানীবাসীর। বিভিন্ন সময় এ সার্ভিস বন্ধের দাবিও জানিয়ে আসছিলো তারা। তাছাড়া বিভিন্ন সংগঠনও সিটিং সার্ভিসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় আওয়াজ তুলেছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজ্জামেল হক চৌধুরী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে সিটিং সার্ভিসের নামে নৈরাজ্য বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছি। শুনেছি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতি নাকি উদ্যোগ নিচ্ছে সিটিং সার্ভিস বন্ধ করার। এমনটি যদি হয় তাহলে এটি নগরবাসীর জন্য একটি আশীর্বাদ হবে। কারণ সিটিং সার্ভিসের নামে বাস মালিকরা প্রতিনিয়ত যাত্রীদের পকেট কাটছে।
পরিবহন খাতের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও বিভিন্ন সময় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “ আমি নিজে দেখেছি গাড়ির গায়ে লেখা ‘সিটিং সার্ভিস’। অথচ ভেতরে লোকজন দাঁড়িয়ে আছে। এটি সিটিং নয়, চিটিং সার্ভিস।”