দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ শুরু আজ

ওমেনআই ডেস্ক: মূল নাম সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। আদর করে যাকে বলা হয় দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ! স্পন্সরপিপের কারণে ২০১৫ সাল থেকে তারই পোশাকি নাম সাফ সুজুকি কাপ। সাত দল নিয়ে ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আজ শুরু হচ্ছে সেই টুর্নামেন্ট। ফাইনাল ম্যাচ দিয়ে শেষ হবে ১৫ সেপ্টেম্বর।
সাত দল দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে অংশ নেবে টুর্নামেন্টে। এ গ্রুপে স্বাগতিক বাংলাদেশের সঙ্গে আছে ভুটান, নেপাল ও পাকিস্তান। বি গ্রুপে লড়বে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ। আজ উদ্বোধনী দিনে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বিকেল ৪টায় মুখোমুখি হবে নেপাল ও পাকিস্তান। সন্ধ্যা ৭টায় ভুটানের বিপক্ষে খেলবে স্বাগতিক বাংলাদেশ।
দক্ষিণ এশিয়ার মর্যাদাপূর্ণ এই টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি সাতবার শিরোপা জিতেছে ভারত। বর্তমান চ্যাম্পিয়নও তারা। বাংলাদেশের ঘরে ট্রফি এসেছে মাত্র একবার। ২০০৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর কেটে গেছে প্রায় দেড় দশক, কখনো আর ট্রফি ছুঁয়ে দেখা হয়নি লাল-সবুজের জার্সিধারীদের। শুধু দেড় দশকের ট্রফি শূন্যতাই নয়, সাফে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অবস্থা আরো করুণ। সর্বশেষ তিন আসরের কোনোবারই গ্রুপপর্ব পার হতে পারেনি বাংলাদেশ। তিন আসরে মোট ৯ ম্যাচ খেলে জয় মাত্র একটিতে, ড্র দুটি, বাকি ছয়টিই হার। অথৈ সাগরে তলিয়ে যেতে থাকা বাংলাদেশের ফুটবলে অবশ্য হঠাৎ আলোর ঝলকানি হয়ে এসেছে ইন্দোনেশিয়ায় সম্প্রতি শেষ হওয়া এশিয়ান গেমসের পারফরম্যান্স। যেখানে ফিফা র?্যাঙ্কিংয়ে প্রায় একশ ধাপ এগিয়ে থাকা কাতারকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো খেলেছে দ্বিতীয় রাউন্ডে। সেই সাফল্য সাফে বাংলাদেশকে কিছুটা হলেও এগিয়ে রাখবে। এখন শুধু ২০০৩ সালের পুনরাবৃত্তি হলেই হয়!
এদিকে গতকাল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী ৭টি দেশের জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান প্রশিক্ষক ও অধিনায়কের উপস্থিতিতে মতিঝিলস্থ বাফুফে ভবনের কনফারেন্স রুমে গতকাল প্রি ম্যাচ প্রেস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তান জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান প্রশিক্ষক জোসে অ্যান্টিনিও নায়েগ্রা ও অধিনায়ক সাদ্দাম হোসেন, মালদ্বীপ জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান প্রশিক্ষক পিটার সেগ্রট ও অধিনায়ক আকরাম আব্দুল গনি, নেপাল জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান প্রশিক্ষক বাল গোপাল মহারাজন ও অধিনায়ক বিরাজ মহারাজন, ভুটান জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান প্রশিক্ষক ট্রেভর মর্গান ও অধিনায়ক কারমা সেদরাপ, শ্রীলঙ্কা জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান প্রশিক্ষক পাকির আলী ও অধিনায়ক সুভাষ মধুসন এবং বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান প্রশিক্ষক জেমি ডে ও খেলোয়াড় নাসির উদ্দিন চৌধুরী। সাফ সুজুকী কাপ এর খেলাসমূহ চ্যানেল-৯ এবং বিটিভি সরাসরি সম্প্রচার করবে। দর্শকদের জন্য স্টেডিয়ামের গেটসমূহ দুপুর ২.০০ ঘটিকা হতে খোলা রাখা হবে। সাংবাদিকদের জন্য মিডিয়া বক্স খেলা শুরুর ৯০ মিনিট পূর্বে এবং খেলা শেষে ৯০ মিনিট পর পর্যন্ত খোলা থাকবে। খেলা চলাকালীন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সকল দোকান বন্ধ থাকবে। সাংবাদিকদের গাড়ী প্রবেশের জন্য ৪ নং গেট খোলা থাকবে এবং খেলোয়াড় বহনকারী বাস প্রবেশের জন্য ২নং গেট খোলা থাকবে। ২০০৩ সালে প্রথম এবং সর্বশেষ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা বাংলাদেশ ২০০৫ আসরে রানার্সআপ হয়েছিল। গত তিনটি আসরে গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নেয়ার হতাশায় ডুবতে হয় দলকে।
যে কারণে সাফে নেই আফগানিস্তান
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের বর্তমান রানার্সআপ আফগানিস্তান। টানা গত তিন আসরের ফাইনালে খেলা আফগানিস্তান এবারের আসরে নেই। তাই সাতটি দল নিয়ে বসছে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ফুটবল আসরটি। গত তিন আসরের ফাইনাল যেন নিজেদের নামেই করে ফেলে ভারত ও আফগানিস্তান। ২০১১ সালে দিল্লি সাফের ফাইনাল খেলে ভারত ও আফগানিস্তান। সেবার আফগানিস্তানকে ৪-০ গোলে হরিয়ে শিরোপা জিতে নেয় স্বাগতিকরা। পরের আসরে ২০১৩ সালে নেপালে অনুষ্ঠিত সাফেও ফাইনাল খেলে দুই দল। এবার ভারতকে ২-০ গোলে পরাজিত করে প্রথমবার সাফের শিরোপা জিতে নেয় আফগানিস্তান।
ঠিক পরের আসরে ২০১৫ সালেও ফাইনালে লড়াই করে ভারত ও আফগানিস্তান। সেবার অবশ্য শেষ হাসি হাসে ভারত। আফগানিস্তানকে ২-১ গোলে পরাজিত করে শিরোপা জেতে নেয় তারা। এই দ্বৈরথ এবার আর চোখে পড়বে না। কারণ আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া এই আসরে নেই আফগানিস্তান। কেননা ২০১৫ সালেই সাফ ত্যাগ করেছে দেশটি। আফগানিস্তান যোগ দিয়েছে মধ্য এশিয়ার ফুটবল সংস্থা সেন্ট্রাল এশিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনে। ওই বছরই মধ্য এশিয়ার ছয়টি দেশ নিয়ে গঠিত হয় ওই সংস্থা। ওই সংস্থায় আছে নিয়মিত বিশ্বকাপ খেলা ইরান। আফগানিস্তান ছাড়া অন্য দেশগুলো হলো, তাজিকিস্তান, কিরঘিজস্তান, তুর্কমিনিস্তান, উজবেকিস্তান। আফগানিস্তানের নতুন সঙ্গী ওই পাঁচটি দেশই ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বেশ ভালো অবস্থানে। বর্তমানে ইরান আছে এশিয়ায় সেরা র্যাঙ্কিংয়ে ৩২ নম্বরে।
সূত্র/আপলোডেড বাই: ভোরের ডাক/অরণ্য সৌরভ