দেশে পুরুষের চেয়ে বেশি পরিশ্রমী নারীরা

ওমেন আই :
বাংলাদেশে পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশি পরিশ্রম করছে। কর্মজীবী নারীরা ঘরের বাইরে পরিশ্রমের সাথে সাথে গৃহস্থালী কাজে পুরুষের চেয়ে বেশি সময় ব্যয় করছে। অন্যদিকে কর্মহীন পুরুষও নারীর চেয়ে তিনগুণ কম সময় গৃহস্থালী কাজে ব্যয় করছে। শুধু তাই নয়, পুরুষরা কর্মে নিয়োজিত থাকুক বা নাই থাকুক তারা সকল পর্যায়ে নারীদের চেয়ে বেশি সময় অবসর ও বিনোদন সুবিধা লাভ করছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপে এ ধরনের তথ্য উঠে এসেছে। দেশে ১৫ বছরের উপরের নারী-পুরুষ তাদের সময়গুলো কী ভাবে ব্যবহার করছে সে সংক্রান্ত এক প্রাথমিক জরিপের ফলাফল বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। রাজধানীর আগারগাঁওস্থ পরিসংখ্যান ভবনে ‘টাইম ইউজ সার্ভে’ শিরোনামে এ জরিপের প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব নজিবুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক ম. হামিদ ও অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবীর। সভাপতিত্ব করেন বিবিএসের মহাপরিচালক গোলাম মোস্তফা কামাল।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, একজন কর্মে নিয়োজিত পুরুষ ২৪ ঘন্টার মধ্যে অর্থের বিনিময়ে কাজে ৬ দশমিক ৯ ঘন্টা ও মহিলারা ৫ দশমিক ২ ঘন্টা ব্যয় করে। কর্মজীবী মহিলারা গৃহস্থালীর কাজে পুরুষের চেয়ে ৩ গুণ বেশি সময় ব্যয় করে। এ ক্ষেত্রে পুরুষ ১ দশমিক ৪ ঘন্টা ও মহিলারা ৩ দশমিক ৬ ঘন্টা কাজ করে। কর্মজীবী পুরুষেরা ১ দশমিক ১ ঘন্টা অবসর অর্থাত্ খেলাধুলা ও বিনোদনে ব্যয় করলেও একই কাজে মহিলারা মাত্র শূন্য দশমিক ৮ ঘন্টা ব্যয় করে। অন্যদিকে কর্মে নিয়োজিত নয় এমন পুরুষ অবসর ও বিনোদনে ২ দশমিক ২ ঘন্টা ও মহিলারা ১ দশমিক ৩ ঘন্টা ব্যয় করে। কর্মে নিয়োজিত নয় এমন পুরুষের চেয়ে মহিলারা ৫ গুণ বেশি গৃহস্থালী কাজে সময় ব্যয় করছে। ব্যক্তিগত পরিচর্যায়ও মহিলাদের চেয়ে পুরুষরা ৪ ঘন্টার চেয়ে বেশি সময় ব্যয় করে।
নজিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এ জরিপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর ফলাফল কর্মসংস্থান ও নারী উন্নয়ন নীতি এবং পরিকল্পনা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে বিবিএস আরো বৃহত্তর পরিসরে এ জরিপ পরিচালনা করবে। গোলাম মোস্তফা কামাল বলেন, যেহেতু প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এ জরিপ করা হয়েছে সেহেতু আন্তর্জাতিক মানের শ্রেণীবিন্যাস ব্যবহার করতে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে আরো বিস্তৃত পরিসরে এ জরিপ করা সম্ভব হবে। এসময় জরিপের বিষয়ে জানানো হয়, ২০১২ সালের ১১ এপ্রিল থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে ৩৭৫টি এলাকা হতে তথ্য সংগ্রহ করে এ জরিপের মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।